ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

দুবাই প্রবাসী চকরিয়ার শওকত ঘুমের মধ্যেই মারা গেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক. চকরিয়া :: চকরিয়ার বরইতলী ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম বানিয়ারছড়ার মিস্ত্রি মনজুর আলম পরিবারের ৮ সদস্যের ঘানি একাই টানতে পারছিলেন না। বৃদ্ধ বয়সে এসেও একাই সামলাতে হচ্ছিল পরিবার সদস্যদের সবার ভরণ–পোষণ। তাই হাড়ভাঙা খাটুনি আর করতে না পেরে পেশা হিসেবে বেছে নেন ইজিবাইক (টমটম) চালকের। এতে পরিবার সদস্যদের মুখে দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করছিলেন তিনি। তাতে কী ভবিষ্যত চলবে? তাই নিজের মেঝ ছেলে শওকত মিয়াকে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই গত ১১ ডিসেম্বর দুবাইয়ে প্রবাস জীবনে পাঠিয়েছেন পরিবারে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা ফেরানোর আশায়। কিন্তু মাস না পেরোতেই তার মৃত্যুর খবর আসলো বাড়িতে।

পরিবার সদস্যরা জানান– কনকনে ঠাণ্ডায় তখনো বিছানায় ঘুমের ঘোরে আচ্ছন্ন ছিল সবাই। এই অবস্থায় গতকাল সোমবার ভোরের আলো ফোটার সাথেই দুবাই থেকে মনজুর আলমকে ফোনে জানায়, শওকত ঘুমের মধ্যেই মারা গেছে।

শওকতের বৃদ্ধ বাবা মনজুর আলম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার ছেলের কোন অসুখ ছিল না। এর পরও সে কেনো ঘুমের মধ্যেই মারা গেল। সেটা আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না। আমার এক বুক আশা ছিল, শওকত বিদেশ গিয়ে কষ্ট করে টাকা উপার্জন করবে। কয়েকবছর পর সেই উপার্জনের টাকা দিয়ে নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করবো। কিন্তু দুবাই যাওয়ার একমাস না হতেই কেনো আমাকে তার মৃত্যুর সংবাদ শুনতে হলো। তিনি আরও বলেন– আত্মীয়–স্বজনদের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা দেনা করে শওকতকে দুবাই পাঠিয়েছি। সেখানে দর্জির কাজ করার জন্য বড় কন্যার জামাতা মোহাম্মদ হোসেন ভিসার ব্যবস্থা করেন। ঠিকমতো দুবাই পৌঁছে বোন জামাই হোসেনের সঙ্গেই দেরাতে থাকতো সে। আজ (গতকাল) খুব ভোরে মেয়ের জামাই ফোন করে জানায়, শওকত ঘুমের মধ্যেই মারা গেছে। সে না–কি ঘুমের মধ্যেই স্ট্রোক করেছে। এই কথা শোনার পর আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।

বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ছালেকুজ্জামান বলেন, পরিবারটি খুবই অসহায়। প্রবাসে যাওয়ার একমাস না পেরোতেই শওকতের মৃত্যুর খবরটি আমিও শুনেছি। দুবাই থেকে শওকতের লাশ দেশে আনতে যথাযথ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, প্রবাসে মারা যাওয়া বরইতলীর শওকতের লাশ দেশে আনার ক্ষেত্রে পরিবার আবেদন করলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: